THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS TALKS AGAINST CASTEIST HEGEMONY IN SOUTH ASIA

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS TALKS AGAINST CASTEIST HEGEMONY IN SOUTH ASIA INDIA AGAINST ITS OWN INDIGENOUS PEOPLES

PalahBiswas On Unique Identity No1.mpg

Sunday, June 2, 2013

রাইনের মারিয়া রিলকে : নবীন কবিকে লেখা চিঠি -১

UNDAY, JUNE 2, 2013

রাইনের মারিয়া রিলকে : নবীন কবিকে লেখা চিঠি -১


(রাইনের মারিয়া রিলকে চিঠিগুলো লিখেছিলেন ২৭ বছর বয়সে,  এক কবি যশোপ্রার্থী ১৯ বছরের বালককে। যা Letters to a Young Poet ( মূল জার্মান নাম : Briefe an einen jungen Dichter) নামে ছাপা হয়। এতে মোট দশটি চিঠি আছে। নিচে প্রথম চিঠিটির ছায়া অনুবাদ। এক একে বাকিগুলোর অনুবাদ করার ইচ্ছে রইল। ) 


প্যারিস,
ফেব্রুয়ারী ১৭, ১৯০৩


প্রীতিভাজনেষু, 

তোমার চিঠি কিছুদিন আগে পেয়েছি। আমার ওপর অগাধ আস্থার জন্য ধন্যবাদ। আমি একটি কাজ করতে পারি তোমার জন্য । সেটা হল তোমার কবিতার আলোচনা। সমালোচনা করার মতো যোগ্যতা আমার নেই। সমালোচনার পরিসরে শিল্পকর্মকে খুব কমই ধরা সম্ভব হয় । এতে সৃষ্টি হয় অহেতুক ভুল বোঝাবুঝির । সব কিছুর যেমন অবয়ব দেয়া সম্ভব হয়না না তেমনি ভাষায়ও প্রকাশ করা যায় না।  এমন অনেক অভিজ্ঞতা আছে যা প্রকাশ করা প্রায় অসম্ভব। এই অভিজ্ঞতাগুলো আমাদের মনোজগতের এমন একটি স্তরে ঘটে যেখানে কোন ভাষা এখনও প্রবেশ করেনি। শিল্পকর্মের ক্ষেত্রে সেটি আরো বেশি করে প্রযোজ্য। এই অভিজ্ঞতাগুলোর অস্তিত্ব বেঁচে থাকে শুধু মাত্র আমাদের স্বল্পমেয়াদী এই জীবনের পরিসরে।

           উপরের এই সংক্ষিপ্ত কথাগুলো কে ভূমিকায় রেখে আমি কি বলতে পারি যে তোমার কবিতায় নিজস্ব কোন  রচনা শৈলি এখনো গড়ে ওঠেনি ।যদিও এতে  একান্ত  সুপ্ত একটা কিছুর নীরব যাত্রা শুরু রয়েছে বলে মনে হয় । তোমার শেষ কবিতা "আমার আত্মা"য় এ ব্যাপারটি আরো স্পষ্ট করে চোখে পড়ে। সেখানে তোমার নিজস্ব কিছু উপলব্ধি শব্দ ও ছন্দ হয়ে উঠতে চাইছে মাত্র। তোমার 'লিয়পার্ডির প্রতি' কবিতায় বিশাল এক নির্জন  সত্তার প্রতি তোমার এক রকম সংযোগের প্রকাশ ঘটেছে । কবিতা গুলো নিজেরা তেমন কিছু হয়ে ওঠেনি। স্বাধীনভাবে এরা মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারেনি আপন মহিমায় । এমন কি তোমার শেষ কবিতাটি বা 'লিয়পার্ডির প্রতি' কবিতাটিও নয়। তোমার চিঠিতে তুমি যে ত্রুটিগুলোর কথা উল্লেখ করেছ সেগুলো পড়ার সময় আমি নিজেও বুঝেছি। নামগুলো এই মুহূর্তে যদিও মনে করতে পারছি না । 

              তুমি জানতে চেয়েছ তোমার কবিতাগুলো ভালো হয়েছে কিনা। তুমি আমাকে যেমনটি জিজ্ঞেস করেছ তেমনি অন্যদেরও জিজ্ঞেস করেছ। তুমি কবিতাগুলো কে ম্যাগাজিনেও পাঠিয়েছ। তোমার কবিতা গুলোকে অন্যের কবিতার সাথে তুলনা করেছ। সম্পাদকেরা তোমার কবিতা বাতিল করে দিয়েছে বলে তুমি মর্মাহত হয়েছ। এখন যখন তুমি আমার উপদেশ চাইছ তবে তোমাকে আমি একটা অনুরোধ করছি। এগুলো আর দয়া করে কর না । তুমি বাইরের দুনিয়ার দিকে দেখছ। এটি এক্ষুণি তোমার এড়িয়ে চলা উচিত। এ ব্যাপারে অন্য কেউ উপদেশ দিতে বা সাহায্য করতে পারবে না। কেউ না । তুমি শুধু মাত্র একটি কাজ করতে পারো। নিজের দিকে ফিরে তাকাও। যা তোমাকে বাধ্য করে লিখতে সেই কারণটি খুঁজে বের করো। খুঁজে দেখ এই কারণটি তোমার হৃদয়ের কত গভীরে গিয়ে শেকড় ছড়িয়েছে । নিজের কাছে স্বীকারোক্তি করো যদি তোমার লেখালেখি নিষিদ্ধ করা হয় তবে তার জন্য প্রাণ দিতে পারবে কিনা। নিজেকে রাতের একান্ত  নির্জনতায় জিজ্ঞেস করো,  আমাকে কি লিখতেই হবে? নিজের গভীর সত্ত্বার  কাছে গিয়ে এর উত্তর খুঁজে বের করার চেষ্টা করো। যদি এই ভাবগম্ভীর প্রশ্নের উওর আসে তীব্রতর চিৎকারে "হ্যা, আমাকে লিখতেই হবে" তাহলে নিজের জীবনকে এর জন্য তৈরি করো। তোমার জীবনের প্রতিটা মূহূর্তে এর জন্য উত্সর্গ করো। নগণ্য থেকে নগণ্যতম সময়গুলোও সাক্ষী থাকুক তোমার এই তীব্র অন্তর্দহনের । তারপর প্রকৃতির খুব কাছে যাও। বলতে চেষ্টা করো , তুমি কী দেখছো, কী অনুভব করছো,  কীই বা ভালোবাসতে পারছো, হারাতে পারছো ? প্রেম বা অতি সহজ কোন বিষয়ে লিখতে চেষ্টা করো না। এগুলি খুব কঠিন কাজ । যে বিষয়গুলো নিয়ে ইতিমধ্যেই অনেক চমত্কার কাজ হয়ে গেছে, সেগুলো নিয়ে মৌলিক কিছু লিখতে গেলে প্রচণ্ড রকমের মুন্সিয়ানা চাই। যা আসতে পারে একমাত্র পরিণত হাতের ছোঁয়ায়। তাই এ বিষয়গুলো থেকে দূরেই থেকো। লিখতে চেষ্টা করো তোমার দৈনন্দিন যাপিত জীবন। তোমার ছোট ছোট দুঃখ, ছোট ছোট ইচ্ছে, হঠাৎ  করে উড়ে আসা ভাবনা কিংবা সৌন্দর্য সম্পর্কে তোমার নিজস্ব বিশ্বাস, সব কিছু লিখ বিনয় ও আন্তরিকতার সাথে।যখন লিখবে তখন তোমার চারপাশের রীতিনীতি, স্বপ্নে দেখা চিত্রকল্প এবং স্মৃতির সাহায্য নাও। যদি তোমার যাপিত জীবনকে আপাত পক্ষে দরিদ্র মনে হয় তবে তাকে দোষ দিও না। দোষ নিজেকে দাও। নিজেকে বলো কবি হওয়ার গৌরব সে তোমার নয় কারণ স্রষ্টার কাছে ধনী দরিদ্র বলে কিছু হয় না ।যদি নিজেকে কখনও খুঁজে পাও জেলখানার চার দেয়ালের মাঝে, যেখানে এই পৃথিবীর কোন শব্দ প্রবেশ করতে পারে না। সেখানে ও কি তোমার সাথে অমূল্য শৈশবের সোনালি দিনগুলো থাকবে না ? সমস্ত শক্তি দিয়ে সেখানে মনসংযোগ করো।  চেষ্টা করো সময়ের অতলে হারিয়ে যাওয়া সেই অনুভূতিগুলোকে আবার নুতন করে অনুভব করতে।  তাতে তোমার ব্যক্তিত্ব হবে আরো প্রখর। তোমার নির্জনতার পরিধি বিস্তৃততর হয়ে নিজেই একটা জগতে পরিণত হবে । সে জগতের সন্ধ্যালোকে তুমি নিজেকে খুঁজে পাবে একা।  অনেক দূরের কোলাহল তোমার কর্ণকুহরে এসে পৌঁছুবে । এই একান্ত নগ্ন নির্জন জগতে হারিয়ে যাওয়ার ফলস্বরূপ যদি কাব্যলক্ষ্মী  তোমাকে ধরা দেন তবে তোমার ভাববার প্রয়োজন পড়বে না তা ভাল না মন্দ। তুমি তোমার কাব্যলক্ষ্মীকে ম্যাগাজিনে পাঠাবে না । কারণ এটি তোমার একান্ত ব্যাক্তিগত । তোমার জীবনেরই একটা অংশ। তোমারই কণ্ঠস্বর। 

        শিল্পকর্ম তখনই ভালো হয় যখন এটি অন্তর্নিহিত তাগিদ থেকে সৃষ্টি হয় । এ তাগিদ দিয়েই শিল্পকে  আলাদা করে  চেনা যায়। সুতরাং, আমি তোমাকে অন্য কোন উপদেশ দিতে অক্ষম। শুধু তোমাকে বলতে পারি নিজেকে জানো। আরো গভীরে প্রবেশ করো। বোঝতে চেষ্টা করো তোমার জীবন যা থেকে উৎসারিত সে জায়গাটা কি বিশাল গহীন। তোমাকে লিখতে হবে কিনা সে প্রশ্নের উত্তর ও আছে সেখানেই। সে উওর যেভাবেই আসুক তা মেনে নাও। তাকে পরিবর্তন করতে যেও না। হয়ত তুমি আবিস্কার করলে একজন কবি হওয়াই তোমার নিয়তি। তা হলে সেই নিয়তিকে মেনে নিয়েই পথচলা শুরু হোক। তার ভার, বিশালতা সবই গ্রহন করো, কোন রকম ফলের আশা ছেড়ে। কবির কাছে তার নিজের একটা ভুবন থাকতেই হবে। কবি তাঁর সৃষ্টির সব উপাদান এই ভুবন থেকেই খুঁজে নেবেন । আর সে ভুবনের প্রতিই কবির সমস্ত জীবন উৎসর্গিত থাকে। 

           নিজের অন্তপুরের নির্জনতায় প্রবেশ করে হয়েতো জানতে পারলে কবি হওয়া তোমার কর্ম নয় ( যদি এক জন না লিখে বাঁচতে পারে তবে তার লিখার প্রয়োজন নেই )। তারপরও এই নিজেকে খোঁজার অর্থ মিথ্যে হবে না তোমার । জীবন সেখান থেকেই সঠিক পথ খুঁজে নিবে। আমি আশা করছি এ পথ  হবে আরো বিস্তৃত। আমার শুভ কামনা রইল। 

           আর কি বলতে পারি ? ছোট থেকে ছোট ঘটনারও জীবনে গুরুত্ব রয়েছে । সব শেষে আমি আর একটা পরামর্শ দিতে চাই। এগিয়ে যাও নীরবে।  আর এই এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে সব থেকে ক্ষতিকারক হতে পারে তোমার নিজের সত্ত্বার বাইরে তোমার প্রশ্নগুলির উত্তর খোঁজার চেষ্টা করা।সে দিকে খেয়াল রেখো। তোমার একান্ত নির্জনতায় নিজস্ব অনুভুতির মাঝেই আছে সে উত্তর। 

        আমার কাছে তুমি যে কবিতাগুলো পাঠিয়েছিলে সেগুলো আমি ফেরত পাঠালাম । আমাকে বিশ্বাস করে প্রশ্নগুলো করার জন্য ধন্যবাদ। আমি যতটুকু পারি চেষ্টা করেছি এর উত্তরগুলো সততার সাথে দেয়ার। আমার চেষ্টার মাত্রাটা হয়ত একজন অপরিচিত মানুষ থেকে তোমার প্রত্যাশাকে ছাড়িয়ে গেছে ।

তোমার একান্ত, 
রাইনের মারিয়া রিলকে

No comments:

Post a Comment

Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...