THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS TALKS AGAINST CASTEIST HEGEMONY IN SOUTH ASIA

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS TALKS AGAINST CASTEIST HEGEMONY IN SOUTH ASIA INDIA AGAINST ITS OWN INDIGENOUS PEOPLES

PalahBiswas On Unique Identity No1.mpg

Monday, December 1, 2014

Nasreen Taslima:আইসিস সম্পর্কে কাউকে ধারণা দেওয়ার প্রয়োজন আছে?


আরীব মজিদ একটা আইসিস জঙ্গি। আইসিস সম্পর্কে কাউকে ধারণা দেওয়ার প্রয়োজন আছে? আমার বিশ্বাস, অধিকাংশ মানুষ জানে আইসিস কারা। আইসিসরা অবশ্য ঘন ঘন তাদের নাম পাল্টায়। আইসিসকে কেউ বলে আইসিল, কেউ বলে আইএস বা ইসলামিক স্টেট। আমি অবশ্য আইসিসই বলি। আমরা টিভিতে বা ইউটিউবে দেখেছি, আইসিসরা হাজার হাজার মানুষকে কী করে আল্লাহর নামে জবাই করছে, কী করে ঠাণ্ডা মাথায় খুন করছে। শিয়া, ইয়াজেদি, ক্রিশ্চান, এমনকী সেই সুন্নিরা যারা আইসিসের বর্বরতা মেনে নিচ্ছে না -- সবাইকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দিতে আইসিস-খুনীদের দু'সেকেণ্ড সময় লাগে না। এমন এক ভয়ংকর বর্বর সন্ত্রাসী আরীব মজিদ সিরিয়া থেকে ফিরে এসেছে ভারতে। সে আইসিসে যোগ দিয়েছিল এ বছরের মে মাসে। মানুষ খুন করার ট্রেনিংও নিয়েছে। এ পর্যন্ত ৫৫ জনকে নাকি খুন করেছে। আল্লাহু আকবর বলে চেঁচিয়ে চেঁচিয়ে অর্ধশতাধিক মানুষকে সে জবাই করেছে অথবা তাদের মাথা লক্ষ করে গুলি ছুড়েছে। হয়তো সংখ্যাটা আরও বেশিই হবে। ছ'মাস তো নেহাত কম সময় নয় সন্ত্রাসী কার্যকলাপের জন্য। আরীব মজিদ ইরাকে আর সিরিয়ায় মানুষ হত্যার মিশন ছেড়ে ভারতে ফিরেছে কারণ, তার শরীরে গুলি লেগেছে, খুন খারাবি করার যোগ্যতা আপাতত সে হারিয়েছে। অগত্যা ঘরে ফিরতে বাধ্য হয়েছে। এও শোনা যাচ্ছে, ৫৫ জনকে খুন করার পরও তাকে টাকা পয়সা দেওয়া হয়নি, সে কারণেই নাকি ফিরেছে সে। তার এই দাবি জানিনা কতটুকু সত্য। একটু ধন্দে পড়ি। কারণ প্রতিদিন যে দলটি তেল বিক্রি করে দশ লক্ষ ডলার পাচ্ছে, সেই দলটির পক্ষে সন্ত্রাসীদের মাসোহারা দেওয়া মোটেও অসম্ভব কিছু নয়। আইসিসই পৃথিবীর সবচেয়ে ধনী সন্ত্রাসী দল।

আরীব মজিদকে নিরীহ ভাবার কোনও কারণ নেই। আরীবের বাবা বলছেন, আরীবকে নয়, আরীবের মগজধোলাই যারা করেছে, তাদের শাস্তি দেওয়া হোক। চমৎকার প্রস্তাব, কিন্তু মুশকিল হলো, আরীবের মগজধোলাই যারা করেছে, তাদেরও তো মগজধোলাই কেউ না কেউ করেছে। আবার সেই কেউ না কেউএর মগজধোলাইও অন্য কেউ করেছে। মগজধোলাইএর উৎস খুঁজতে গেলে আমরা কিন্তু পৌঁছোবো ইসলামের পবিত্র গ্রন্থে, কোরানে আর হাদিসে। শাস্তি তো কোনও গ্রন্থকে দেওয়া যাবে না। কারণ গ্রন্থ নিতান্তই প্রাণহীন বস্তু। গ্রন্থের ভেতরে যা থাকে, যে ধারণা, যে ভাবনা, যে বিশ্বাস, যে আদর্শ --সেগুলো ভয়ংকর। সেগুলোকেও শাস্তি দেওয়া যায় না। রচয়িতাকে শাস্তি দেওয়ার কথা কেউ হয়তো ভাবে, সেটিও আবার বাক স্বাধীনতার পরিপন্থী। রচয়িতার কথা বলে লাভ নেই, রচয়িতার কোনও হদিশ এ যুগে পাওয়া যাবে না। কেউ বিশ্বাস করুক না করুক, সত্য কথা হলো, কোরানে একশ' ন'টা আয়াত আছে যেসব আয়াতে অমুসলিম বা অবিশ্বাসীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের কথা বলা হয়েছে। কোরানের (২: ১৯১-১৯৩), ( ২: ২১৬), (৩: ৫৬), (৩: ১৫১), (৪: ৭৪), (৪: ৮৯ ) (৯: ৭৩)., (৯: ১১১), (৬৬: ৯)---- এরকম অসংখ্য আয়াত বলছে, যেখানেই অবিশ্বাসীদের দেখবে, সোজা মেরে ফেলবে। অবিশ্বাসী তারা যারা ইসলামে বিশ্বাস করে না। অসংখ্য সহি হাদিসও রয়েছে যেসবে বর্ণণা করা হয়েছে কী করে ইসলামের নবী অতর্কিতে অবিশ্বাসীদের ওপর আক্রমণ করতেন।

ইতিহাস থেকে ভালো মন্দ জ্ঞান নিই আমরা। যুক্তি বুদ্ধি দিয়ে যে কাজকে আমরা মন্দ বলি, সেই কাজকে দোযখের ভয়ে অথবা বেহেস্তের লোভে, অনেক লোক আছে, মন্দ বলে না। মানুষকে, শুধু তার ভিন্ন ধর্মে বিশ্বাস বলে, বা কোনও ধর্মে বিশ্বাস নেই বলে, বা শুধু ইসলামে অবিশ্বাস বলে, মেরে ফেলার কথা ইসলাম ছাড়া আর কোনও ধর্ম বলেনি। অন্যান্য ধর্মগ্রন্থে নারীবিরোধ আছে, মানবাধিকারের বিপক্ষে অজস্র কথা আছে, কিন্তু অন্যান্য ধর্মের বেশির ভাগ মানুষ আক্ষরিক অর্থে সেইসব শ্লোক এখন আর গ্রহণ করে না। দেশে দেশে গণতন্ত্র, মানবাধিকার, শিশুর অধিকার, নারীর অধিকার আর বাক স্বাধীনতার ওপর ভিত্তি করে আইন তৈরি হয়েছে, সংবিধান রচিত হয়েছে। ব্যাতিক্রম শুধু মুসলিম দেশগুলোয়। দেশগুলোয় মৌলবাদী নয়, সন্ত্রাসী নয়, এমন মুসলিমের সংখ্যা প্রচুর হলেও ইসলামের বৈষম্যমূলক আইনকে এবং নারীবিরোধকে অস্বীকার করার প্রবণতা কিন্তু খুবই কম। আল্লাহ বলেছেন, মুসলমান হওয়া মানে কোরান আর হাদিসের প্রতিটি অক্ষরকে বিশ্বাস করা। এই অবস্থায় কোন মুসলমানের সাধ্য আছে বিশ্বাস না করার! 
মুসলমানরা যদি আক্ষরিক অর্থে কোরান হাদিসকে না নিত, যদি অশিক্ষিত মোল্লাদের ইসলাম শিক্ষার গুরু বনার সুযোগ দেওয়া না হতো, যদি মসজিদ মাদ্রাসাগুলোকে মানুষের বিরুদ্ধে ঘৃণা ছড়ানোর জায়গা হিসেবে বা মগজধোলাইয়ের কারখানা হিসেবে ব্যবহার করা না হতো, তাহলে আমরা হয়তো অন্য এক সমাজ দেখতে পেতাম। পৃথিবীর প্রতিটি ধর্মীয় গোষ্ঠী নতুন যুগের সঙ্গে সঙ্গে বিবর্তিত হয়েছে। কেবল বিবর্তিত হতে গিয়ে মাঝপথে আটকে রয়েছে মুসলিম সমাজ।

আরীব মজিদ একা নয়, ভারতের আরও মুসলিম তরুণ ইরাক ও সিরিয়ার সন্ত্রাসী দল আইসিসে যোগ দিয়েছে। শাহীন তাংকি, ফরহাদ শেখ, আমান টাণ্ডেল। এরা আরীবেরই বন্ধু। আরীব মজিদ দেশে ফিরলেও বাকিরা ফেরেনি। আরীবের শরীরে যদি গুলি না লাগতো, তাহলে সে ফিরতো না। একের পর এক সে মানুষকে জবাই করে যেতো। আরীব বলেছে, তার বা তার বন্ধুদের মগজধোলাই কেউ করেনি। তারা নিজেরাই ইন্টারনেট থেকে তথ্য সংগ্রহ করেছে এবং সিদ্ধান্ত নিয়েছে আইসিসে যোগ দেবে। তারা বিশ্বাস করে, পৃথিবীর সব মুসলিমের দায়িত্ব ইসলামি দুনিয়া কায়েম করা, যে দুনিয়ায় মুসলিম ছাড়া আর কারও স্থান নেই। অমুসলিমের জগতকে ধীরে ধীরে মুসলিমের জগতে পরিবর্তিত করার মহান দায়িত্ব, আরীব বিশ্বাস করে, তার আর তার বন্ধুদের মতো তরুণ প্রজন্মের। সে যাক, আমাদের ভুললে চলবে না, আরীব কিন্তু এমন একটা দেশের নাগরিক, যেখানে সংখ্যাগরিষ্ঠ লোক অমুসলিম, হিন্দু। আইসিসের আদর্শে আরীব দীক্ষিত হয়েছে, সুতরাং আরীব ভালো করেই জানে আইসিসের আদর্শে কোনও অমুসলিমের ঠাঁই নেই, কোনও নাস্তিকের, কোনও আইসিসবিরোধীদের স্থান নেই।

এখন প্রশ্ন হলো, আরীব‌ কি কোনও শাস্তি পাবে না? এখানেই আশংকা। ভারতে আইসিসবিরোধী কোনও আইন নেই। তার ওপর আরীব ভারতের মাটিতে কোনও সন্ত্রাস করেনি। করেছে ইরাকে, করেছে সিরিয়ায়। দূর বিদেশে সন্ত্রাস করার শাস্তি কী হতে পারে, এ নিয়ে ভারতের আইনবিশেষজ্ঞরা চিন্তাভাবনা করে একটি সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন, ভারতীয় দণ্ডবিধি আইনে ১২৫ ধারায় যদি এশিয়ার কোনও দেশের বিরুদ্ধে, যে দেশের সঙ্গে ভারতের সুসম্পর্ক আছে, ভারতীয় কোনও নাগরিক যুদ্ধ করে, তাহলে তার শাস্তি হতে পারে যাবজ্জীবন। এই আইনে কারও বিরুদ্ধে মামলা করতে গেলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর অনুমতি নিতে হয়। জানি না এই আইনটি কত জুৎসই হবে আরীবের বিরুদ্ধে। কেউ কেউ ধারণা করছে আরীব ক'দিন পরই মুক্তি পেয়ে যাবে। ভারতের রাজনীতিতে মুসলিম তোষণ নীতি আবার ভয়ংকর একটা নীতি। এই নীতি হিন্দুত্ববাদী দলকেও মেনে চলতে হয়। যদি এমনই অবস্থা, তাহলে সরকারও সম্ভবত আরীব মজিদের বিরুদ্ধে কঠিন কোনও ব্যবস্থা নেবে না, কারণ ভারতের মুসলিমরা যদি আবার রাগ করে! জনসংখ্যার পঁচিশ ভাগকে কার সাধ্য আছে অখুশি করে!

আরীব মজিদরা যদি মুক্তভাবে চলাফেরা করে ভারতবর্ষে, তবে কট্টর সুন্নি মুসলিম ছাড়া এই ভারতবর্ষের আর কেউই নিরাপদ নয়। সবচেয়ে অনিরাপদ আমাদের মতো মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করা ইসলাম, ইসলামি শরিয়া, ইসলামি সন্ত্রাস বিরোধী মানুষ। আমাদের জবাই করার জন্য আরীব মজিদ তার ছুরিতে অনেক আগেই শান দিয়ে রেখেছে। এখন শুধু আমাদের গলাগুলো হাতের কাছে তার পেলেই হয়।

তসলিমা নাসরিন ॥ আরীব মজিদ এক আইসিস জঙ্গি। আইসিসরা হাজার হাজার মানুষকে আল্লাহর নামে জবাই করছে, ঠাণ্ডা মাথায় খুন করছে। শিয়া, ইয়াজেদি, ক্রিশ্চান, এমনকী যে সুন্নিরা আইসিসের বর্বরতা মেনে নিচ্ছে না, সবাইকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দিতে...

No comments:

Post a Comment

Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...