THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS TALKS AGAINST CASTEIST HEGEMONY IN SOUTH ASIA

THE HIMALAYAN TALK: PALASH BISWAS TALKS AGAINST CASTEIST HEGEMONY IN SOUTH ASIA INDIA AGAINST ITS OWN INDIGENOUS PEOPLES

PalahBiswas On Unique Identity No1.mpg

Monday, November 4, 2013

সাহিত্য অকাদেমি পাচ্ছেন সাঁওতালি শিশুসাহিত্যিক

সাহিত্য অকাদেমি পাচ্ছেন সাঁওতালি শিশুসাহিত্যিক

literature
অরূপকুমার পাল

ঝাড়গ্রাম: 
'খোকার মনের ঠিক মাঝখান ঘেঁষে, যে পথ গিয়েছে সৃষ্টিশেষে..' সে পথের সন্ধান মিলে গিয়েছিল আচমকাই৷ 'সকল উদ্দেশ হারা, সকল ভূগোল-ছাড়া..' সে রাস্তা আর ছাড়েননি ঝাড়গ্রামের সারিধরম হাঁসদা৷ সে পথে তাঁর অক্লান্ত চলা এই ৫৯ বছর বয়স পর্যন্ত৷ জঙ্গলমহলের প্রত্যন্ত গ্রামে বসে সাঁওতালি ভাষায় রচনা করে গিয়েছেন একের পর শিশু সাহিত্য৷ ছোট্ট মনের কল্পনা, চাওয়া-পাওয়া, আশা-আকাঙ্খার কথা ফুটিয়ে তুলেছেন কাগজ-কলমে৷ শুধু গল্প উপন্যাস নয়, নাটক, যাত্রাপালা, প্রবন্ধও লিখেছেন শিশুদের সমস্যা সংক্রান্ত নানা বিষয়ে৷ তবে কবি হিসেবেই তাঁর খ্যাতি৷ সত্তরের দশক থেকে আজ পর্যন্ত লেখনী থামেনি একবারও৷ তারই স্বীকৃতি এসেছে এত দিনে৷ তাঁর 'ডোঁবে বাহা' (বাংলা অর্থ - ফুলের কুঁড়ি) কাব্যগ্রন্থের জন্য সাহিত্য অকাদেমি তাঁকে ভূষিত করছে ২০১৩ সালের শিশু সাহিত্য পুরস্কারে৷ গত ২৩ অগস্ট দিল্লির অকাদেমি কার্যালয় থেকে ফোনে তাঁকে এ খবর জানানো হয়৷ ২৮ অগস্ট ডাকে চিঠি পান৷ পুরস্কার নিতে নভেম্বর মাসে গোয়া যাবেন সারিধরম৷ ঝাড়গ্রাম মহকুমার তথ্য সংস্কৃতি আধিকারিক কুশল চক্রবর্তী বলেন, 'দীর্ঘদিন ধরে সাহিত্যচর্চা করছেন সারিধরমবাবু৷ ওঁকে সহকর্মী হিসেবে পেয়ে আমরা গর্বিত৷'

সারিধরম নামটি অবশ্য তাঁর পিতৃদত্ত নয়৷ ১৯৫৫ সালে জন্মের সময় বাপ-মা নাম রেখেছিলেন বাসুদেব৷ বাড়ি ছিল বিনপুরের শিলদায়৷ ষাটের দশকে কলেজে পড়ার সময় থেকেই লেখালিখির শুরু বাসুদেবের৷ তবে তা ছাপা হয়নি কোথাও৷ গ্রামের মাস্টারমশাই লালচাঁদ মুর্মুকে লেখাটেখা পড়াতেন৷ তিনিই 'সারিধরম' ছদ্মনাম দেন বাসুদেবকে৷ সেই থেকে এ নাম তাঁর সর্বক্ষণের সঙ্গী৷ প্রেরণা বললে অবশ্য দু'জনের নাম করেন সারিধরম- সাধু রামচাঁদ মুর্মুসত্তরের দশকের শেষ দিকে গ্র্যাজুয়েট হয়ে কাজ নেন বেলপাহাড়ি বিডিও অফিসে৷ কিন্ত্ত সে কাজ ভালো লাগত না৷ মন পড়ে থাকত খাতাকলমের জগতে৷ লেখালিখি চলত, কিন্ত্ত পেশার তাগিদে সময় মিলত কম৷ তাই ১৯৮৪ সালে ঝাড়গ্রামের আদিবাসী লোকরঞ্জন শাখায় সঙ্গীতশিল্পী হিসেবে যোগ দেন৷ গানের একটা চর্চা ছিলই পরিবারে৷ বাবা পদান হাঁসদা দিনমজুরি করেও গান গাইতেন৷ সারিধরম নিজে গান লেখেনও৷ সেই সূত্রেই সরকারি চাকরি৷ '৮৭-তে বিয়ে করেন ভাগাবাঁধ প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষিকা কাজলকে৷ জীবনভর স্বামীর কাজে যোগ্য সহধর্মিণীর মতো সঙ্গত করে গিয়েছেন তিনি৷ ২০০৩ সালে গ্রামের বাড়ি ছেড়ে ঝাড়গ্রাম শহরের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের নুননুনগেড়িয়ায় বাড়ি করেন সারিধরম৷ যদিও শহরের কংক্রিটের জঙ্গলে মন টেঁকেনা তাঁর৷ বার বার বলেন, 'শহুরে মানুষ আধুনিকতার দৌলতে টিভি-রেডিও-কম্পিউটারে অনেক কিছু দেখে, সে কথা ঠিক৷ কিন্ত্ত সোঁদা মাটির গন্ধ তো পায় না! কলম ধরলেই সেই রূপ-রস-গন্ধ আমার কাছে জলীয় বাষ্পের মতো ভেসে ভেসে আসে৷ সুবিধের জন্য গ্রাম ছেড়েছি৷ কিন্ত্ত শিকড় আমার ওখানেই৷

ইতিমধ্যেই সাতটি কবিতার বই ৩৫টি গল্পের সংকলন এবং পাঁচটি যাত্রার বই প্রকাশিত হয়েছে৷ কুসংস্কারের বিরুদ্ধে লেখা তাঁর নাটক 'ডাইনি' আকাশবাণীতে সম্প্রচারিত হয়েছিল সেই সত্তরের দশকে৷ আগে লিখতেন বাংলা ও দেবনাগরি লিপিতে সাঁওতালি ভাষায়৷ নব্বইয়ের দশক থেকে অলচিকি লিপির প্রচলন শুরু হওয়ায় সেটাই ব্যবহার করেন৷ ১৯৮৬-তে 'সারজম মহল' নামে পত্রিকা প্রকাশ৷ ২০০৯-এ 'অল ইন্ডিয়া সাঁওতাল রাইটার্স অ্যাসোসিয়েশন'-এর পুরস্কার, ২০১২-তে মার্শাল গাঁওতার 'সাম্মানিক পদক' দিয়ে যে বৃত্তের সূচনা হয়েছিল, তা সম্পূর্ণ হল সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কারে এসে৷ উচ্ছ্বসিত হতে পারেন না সারিধরম৷ ২০১২-তে স্ত্রীবিয়োগ অনেকটাই শূন্য করে দিয়েছে তাঁকে৷ তবু কলম সঙ্গ ছাড়েনি৷ পুরস্কারের খবর শুনে বললেন, 'কাজলের অভাব পূরণ হওয়ার নয়৷ ছাত্রজীবন থেকে আজও লেখনী নিয়ে যে সংগ্রাম করছি, তাতে ও থিল আমার সঙ্গী৷ ওর অনুপস্থিতিতে এই পুরস্কার শোষিত-বঞ্চিত-নিপীড়িত মানুষদের উত্‍সর্গ করলাম৷'

No comments:

Post a Comment

Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...