এই সময়, ব্যারাকপুর: এক সাংবাদিকের গায়ে পেট্রোল ঢেলে পুড়িয়ে মারার চেষ্টার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে৷ আরও দুই সাংবাদিককে বাঁশ ও রড দিয়ে বেধড়ক মারধর করা হল৷ শুক্রবার ঘটনাটি ঘটেছে ব্যারাকপুরের সদর বাজারে৷ আহত তিন জনের মধ্যে দু'জনের অবস্থা সঙ্কটজনক৷ তাঁরা হলেন ২৪ ঘণ্টা চ্যানেলের বরুণ সেনগুন্ত ও এবিপি আনন্দের আস্তিক চট্টোপাধ্যায়৷ আহত হয়েছেন কলকাতা টিভির সাংবাদিক টোনা সিংহরায়ও৷ বৃহস্পতিবার রাতে তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দলের জেরে খুন হন তৃণমূল কর্মী জিতুলাল তাঁতি (৩৮)৷ সেই ঘটনারই খবর সংগ্রহ করতে গিয়েছিলেন সাংবাদিকেরা৷ হামলাকারীদের হাতে তৃণমূলের পতাকা ছিল৷ যদিও তৃণমূল নেতা পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, 'এই ঘটনার সঙ্গে তৃণমূলের কেউ জড়িত নন৷' ঘটনার প্রতিবাদে নিন্দায় মুখর হয়েছে বিভিন্ন মহল৷ বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র বিষয়টি রাজ্যপালকে জানিয়েছেন৷ তৃণমূলের তিন কর্মীকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে৷
ঘটনার সূত্রপাত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে দশটা নাগাদ৷ তৃণমূলের সক্রিয় কর্মী জিতু বাড়ি ফেরার পথে দুষ্কৃতীদের ছোড়া গুলিতে খুন হন৷ রাজনৈতিক মহলের খবর, এই এলাকায় শাসক দলের এক দাপুটে বিধায়কের সঙ্গে আর এক বড় নেতার বিরোধ সর্বজনবিদিত৷ বিধায়কের হয়ে শিবু যাদব নামে এক নেতা এলাকা দেখভাল করেন৷ জিতুও শিবুবাবুর অনুগামী৷ অভিযোগ, বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর মদতেই জিতুকে খুন করা হয়৷ শুক্রবার সকালেই শিবু গোষ্ঠীর লোকেরা সদরবাজারে তৃণমূলের কাউন্সিলর তথা আইনজীবী রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যের বাড়িতে চড়াও হয়৷ তাঁর বাড়ি এবং চেম্বারে ব্যাপক ভাঙচুর করা হয়৷ তাঁর বাইকও ভেঙে দেওয়া হয়৷ হামলাকারীদের অনেকের হাতেই তৃণমূলের পতাকা ছিল৷ ছিল বড় বড় লোহার রড এবং বাঁশ৷ গোলমালের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে হাজির হন সাংবাদিকেরা৷ তখনই ওই তৃণমূল সমর্থকেরা লাঠি, বাঁশ, রড নিয়ে সাংবাদিকদের উপর চড়াও হয়৷ মাটিতে ফেলে আস্তিকবাবুদের পেটানো হয়৷ আস্তিকের মাথা ফেটে রক্ত ঝরতে থাকে৷ বেদম মারা হয় বরুণ সেনগুন্তকেও৷ একদল আস্তিককে পেটাতে থাকে৷ আর এক দল বরুণকে টেনে একটি ঘরে নিয়ে যায়৷ সেখানে তাঁকে আটকে পেট্রোল ঢেলে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা করে ওই দুষ্কৃতীরা৷ পুলিশ এসে বরুণবাবুদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়৷ দু'জনেই বিএন বসু হাসপাতালে চিকিত্সাধীন৷ সাংবাদিকদের বাইক এবং ক্যামেরাও ভেঙে চুরমার করে দেওয়া হয়৷ পরে এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে জয় মণ্ডল, বলবীর সিং, রাজকুমার সিংকে গ্রেন্তার করে পুলিশ৷ আর খুনের ঘটনায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে ভোলা সিং, রাম যাদব এবং তপন সিংকে৷ ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার সঞ্জয় সিং জানান, এফআইআরে নাম থাকা সকলকেই ধরা হবে৷ এফআইআরে আহত সাংবাদিক বরুণবাবুর পরিবার তাঁকে পুড়িয়ে মারার চেষ্টার অভিযোগ লিপিবদ্ধ করেন৷
তৃণমূল নেতৃত্ব এই ঘটনায় তাঁদের দলের কারও জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছেন৷ ঘটনার নিন্দা করেও তৃণমূলের মহাসচিব এবং রাজ্যের শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, 'এটা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আমার কথা হয়েছে৷ স্থানীয় প্রতিনিধিদের সঙ্গেও কথা বলেছি৷ খোঁজ নিয়ে দেখেছি, এর সঙ্গে তৃণমূলের কোনও যোগাযোগ নেই৷ দলকে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা হচ্ছে৷ তবু কাউকে ছাড়া হবে না৷ আমাদের দলের কেউ না থাকলেও দোষীদের ছাড়া হবে না৷ তৃণমূলের ঝান্ডা নিয়ে অন্য কেউ এ কাজ করতে পারে৷' রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী এবং উত্তর ২৪ পরগনার দলীয় পর্যবেক্ষক জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, 'তৃণমূলের ঝান্ডা তো বাজারেও কিনতে পাওয়া যায়৷' একই দাবি দলের জেলা সভাপতি নির্মল ঘোষেরও৷ শাসকদলের নেতা-মন্ত্রীদের সুরে সুর মিলিয়েই ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার সঞ্জয় সিং রাজনৈতিক কোন্দলের কথা অস্বীকার করেছেন৷ বিরোধীরা শাসকদলের সাফাইয়েরও তীব্র সমালোচনা করেন৷ ঘটনাস্থলের অদূরেই টিটাগড়ে সিটুর এক সভায় এ দিন সন্ধ্যায় প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য বলেন, 'ভয়ঙ্কর ঘটনা৷ তৃণমূল আজই ব্যারাকপুরে নিজেদের মধ্যে মারামারি করেছে৷ সাংবাদিকেরা আক্রান্ত হয়েছেন৷ আমি হাসপাতালে যেতে পারতাম জখম সাংবাদিকদের দেখতে৷ কিন্তু জরুরি কাজ আছে বলে যেতে পারছি না৷' কংগ্রেস নেত্রী এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দীপা দাশমুন্সি বলেন, 'সংবাদমাধ্যমের মুখ বন্ধ করার জন্যই এই সব করা হচ্ছে৷' রেলের প্রতিমন্ত্রী অধীর চৌধুরীর প্রতিক্রিয়া, 'রাজ্যে এখন চূড়ান্ত নৈরাজ্য চলছে৷ সকলকে এর প্রতিবাদ করতে হবে৷' বিরোধী নেতা সূর্যকান্ত মিশ্র বলেন, 'এটা সাধারণ কোনও ঘটনা নয়৷ শাসক দলের দুই নেতার মধ্যে গোলমালের কারণে খুনের ঘটনা ঘটেছে৷ তার পরই হামলা হয়৷ সেই খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছেন সাংবাদিকরা৷' তিনি রাজ্যপালকে লেখা চিঠিতে আহত দুই সাংবাদিককে এসএসকেএম হাসপাতালে পাঠানোর আর্জি জানিয়েছেন৷ ঘটনার নিন্দা করেছে কলকাতা প্রেস ক্লাব৷
ঘটনার সূত্রপাত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে দশটা নাগাদ৷ তৃণমূলের সক্রিয় কর্মী জিতু বাড়ি ফেরার পথে দুষ্কৃতীদের ছোড়া গুলিতে খুন হন৷ রাজনৈতিক মহলের খবর, এই এলাকায় শাসক দলের এক দাপুটে বিধায়কের সঙ্গে আর এক বড় নেতার বিরোধ সর্বজনবিদিত৷ বিধায়কের হয়ে শিবু যাদব নামে এক নেতা এলাকা দেখভাল করেন৷ জিতুও শিবুবাবুর অনুগামী৷ অভিযোগ, বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর মদতেই জিতুকে খুন করা হয়৷ শুক্রবার সকালেই শিবু গোষ্ঠীর লোকেরা সদরবাজারে তৃণমূলের কাউন্সিলর তথা আইনজীবী রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যের বাড়িতে চড়াও হয়৷ তাঁর বাড়ি এবং চেম্বারে ব্যাপক ভাঙচুর করা হয়৷ তাঁর বাইকও ভেঙে দেওয়া হয়৷ হামলাকারীদের অনেকের হাতেই তৃণমূলের পতাকা ছিল৷ ছিল বড় বড় লোহার রড এবং বাঁশ৷ গোলমালের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে হাজির হন সাংবাদিকেরা৷ তখনই ওই তৃণমূল সমর্থকেরা লাঠি, বাঁশ, রড নিয়ে সাংবাদিকদের উপর চড়াও হয়৷ মাটিতে ফেলে আস্তিকবাবুদের পেটানো হয়৷ আস্তিকের মাথা ফেটে রক্ত ঝরতে থাকে৷ বেদম মারা হয় বরুণ সেনগুন্তকেও৷ একদল আস্তিককে পেটাতে থাকে৷ আর এক দল বরুণকে টেনে একটি ঘরে নিয়ে যায়৷ সেখানে তাঁকে আটকে পেট্রোল ঢেলে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা করে ওই দুষ্কৃতীরা৷ পুলিশ এসে বরুণবাবুদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়৷ দু'জনেই বিএন বসু হাসপাতালে চিকিত্সাধীন৷ সাংবাদিকদের বাইক এবং ক্যামেরাও ভেঙে চুরমার করে দেওয়া হয়৷ পরে এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে জয় মণ্ডল, বলবীর সিং, রাজকুমার সিংকে গ্রেন্তার করে পুলিশ৷ আর খুনের ঘটনায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে ভোলা সিং, রাম যাদব এবং তপন সিংকে৷ ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার সঞ্জয় সিং জানান, এফআইআরে নাম থাকা সকলকেই ধরা হবে৷ এফআইআরে আহত সাংবাদিক বরুণবাবুর পরিবার তাঁকে পুড়িয়ে মারার চেষ্টার অভিযোগ লিপিবদ্ধ করেন৷
তৃণমূল নেতৃত্ব এই ঘটনায় তাঁদের দলের কারও জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছেন৷ ঘটনার নিন্দা করেও তৃণমূলের মহাসচিব এবং রাজ্যের শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, 'এটা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আমার কথা হয়েছে৷ স্থানীয় প্রতিনিধিদের সঙ্গেও কথা বলেছি৷ খোঁজ নিয়ে দেখেছি, এর সঙ্গে তৃণমূলের কোনও যোগাযোগ নেই৷ দলকে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা হচ্ছে৷ তবু কাউকে ছাড়া হবে না৷ আমাদের দলের কেউ না থাকলেও দোষীদের ছাড়া হবে না৷ তৃণমূলের ঝান্ডা নিয়ে অন্য কেউ এ কাজ করতে পারে৷' রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী এবং উত্তর ২৪ পরগনার দলীয় পর্যবেক্ষক জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, 'তৃণমূলের ঝান্ডা তো বাজারেও কিনতে পাওয়া যায়৷' একই দাবি দলের জেলা সভাপতি নির্মল ঘোষেরও৷ শাসকদলের নেতা-মন্ত্রীদের সুরে সুর মিলিয়েই ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার সঞ্জয় সিং রাজনৈতিক কোন্দলের কথা অস্বীকার করেছেন৷ বিরোধীরা শাসকদলের সাফাইয়েরও তীব্র সমালোচনা করেন৷ ঘটনাস্থলের অদূরেই টিটাগড়ে সিটুর এক সভায় এ দিন সন্ধ্যায় প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য বলেন, 'ভয়ঙ্কর ঘটনা৷ তৃণমূল আজই ব্যারাকপুরে নিজেদের মধ্যে মারামারি করেছে৷ সাংবাদিকেরা আক্রান্ত হয়েছেন৷ আমি হাসপাতালে যেতে পারতাম জখম সাংবাদিকদের দেখতে৷ কিন্তু জরুরি কাজ আছে বলে যেতে পারছি না৷' কংগ্রেস নেত্রী এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দীপা দাশমুন্সি বলেন, 'সংবাদমাধ্যমের মুখ বন্ধ করার জন্যই এই সব করা হচ্ছে৷' রেলের প্রতিমন্ত্রী অধীর চৌধুরীর প্রতিক্রিয়া, 'রাজ্যে এখন চূড়ান্ত নৈরাজ্য চলছে৷ সকলকে এর প্রতিবাদ করতে হবে৷' বিরোধী নেতা সূর্যকান্ত মিশ্র বলেন, 'এটা সাধারণ কোনও ঘটনা নয়৷ শাসক দলের দুই নেতার মধ্যে গোলমালের কারণে খুনের ঘটনা ঘটেছে৷ তার পরই হামলা হয়৷ সেই খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছেন সাংবাদিকরা৷' তিনি রাজ্যপালকে লেখা চিঠিতে আহত দুই সাংবাদিককে এসএসকেএম হাসপাতালে পাঠানোর আর্জি জানিয়েছেন৷ ঘটনার নিন্দা করেছে কলকাতা প্রেস ক্লাব৷
No comments:
Post a Comment