কৌশিক প্রধান
রাজ্যে পালাবদলের পরেও শাসক দলের চরিত্রে যে বদল হয়নি, তার প্রমাণ পদে পদে মিলছে৷ আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রথম দফায় ৯টি জেলায় ২৯০৮টি আসন শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে গিয়েছে, যেমন হত অতীতের বাম জমানায়৷ তখন শাসক বামফ্রন্টের বিরুদ্ধে হামলা বা বাধাদানের যে অভিযোগ তৃণমূল কংগ্রেস করত, এখন সেই একই অভিযোগ শাসকদল তৃণমূলের বিরুদ্ধে করছে বামেরা৷
এই পরিস্থিতিতে পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে রাজ্য সরকার কমিশনের সঙ্গে অসহযোগিতা করছে বলে শনিবার বিকেলে রাজভবনে গিয়ে রাজ্যপাল এমকে নারায়ণনকে ফের জানিয়ে এলেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার মীরা পাণ্ডে৷ পরে মীরাদেবী জানান, 'পঞ্চায়েত নির্বাচনের সর্বশেষ পরিস্থিতি রাজ্যপালকে জানিয়েছি৷ নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ও তাঁকে অবহিত করেছি৷' রাজভবন সূত্রের খবর, রাজ্যপালকে মীরাদেবী জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় বাহিনী না-পাওয়ার ব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রী সাংবাদিক সম্মেলন করে যা বলেছেন, তা সরকারের তরফে চিঠি দিয়ে কমিশনকে জানানো হয়নি৷ এই অবস্থায় সরকার ভোটের নিরাপত্তা নিয়ে কমিশনকে কোনও সন্তোষজনক আশ্বাস না-দিলে আগামী সন্তাহে কমিশন ফের আদালতের দ্বারস্থ হতে পারে৷ মহাকরণ সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠানোর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করার জন্য সোমবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে চিঠি পাঠাবে রাজ্য সরকার৷ এ ব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীলকুমার সিন্ধের সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানা গিয়েছে৷
প্রথম দফার ৯টি জেলার ভোটে এখনও পর্যন্ত রাজ্য নির্বাচন কমিশনের যা হিসাব, তাতে গ্রাম পঞ্চায়েতের মোট ২৯,৮৪৯টি আসনের মধ্যে ২৯০৮টি আসনই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে গিয়েছে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস৷ অর্থাত্, মোট আসনের ১০ শতাংশই কোনও নির্বাচন ছাড়াই তৃণমূলের দখলে গিয়েছে৷ পঞ্চায়েত সমিতির মোট ৫২৬২টি আসনের মধ্যে ৪৪৩টিতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছে তৃণমূল৷ তবে হাওড়া জেলায় ১৩৯টি গ্রাম পঞ্চায়েত আসন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছে বামফ্রন্টও৷ এই ভিন্ন স্রোতও প্রবল ভাবে আলোচনায় উঠে এসেছে৷
২০০৩-এ পঞ্চায়েত ভোটে বিরোধীদের অভিযোগ ছিল, প্রায় ছয় হাজার আসনে তারা প্রার্থী দিতে পারেনি৷ আর ২০০৮-এর ভোটে সারা রাজ্যে ২৩৬২টি গ্রাম পঞ্চায়েত এবং ৪৪৩টি পঞ্চায়েত সমিতির আসনে কোনও নির্বাচন ছাড়াই প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছিলেন৷ বলাই বাহুল্য, তার বেশিরভাগই দখল করেছিল তত্কালীন শাসকদল সিপিএম৷ সেই তুলনায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ের হিসাবে এ বারের পঞ্চায়েত ভোট হয়তো নজির সৃষ্টি করতে চলেছে৷ বিরোধীদের অভিযোগ, শাসক দলের হামলা ও বাধাদানের কারণেই ওই সব আসনে তারা প্রার্থী দিতে পারেনি৷ ২০০৩ ও ২০০৮-এর পঞ্চায়েত ভোটে তদানীন্তন বামফ্রন্ট সরকারের বিরুদ্ধে একই অভিযোগ করেছিল এখনকার শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস৷
শুক্রবারই শেষ হয়েছে প্রথম দফার ভোটের জন্য মনোনয়নপত্র পরীক্ষা করার কাজ৷ তার পরে জেলাগুলি থেকে কমিশনে যে হিসাব পেঁৗছেছে, তাতে দেখা যাচ্ছে হুগলিতে সব থেকে বেশি আসনে তৃণমূল প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন৷ হুগলি নিয়েই বিরোধীদের অভিযোগ ছিল সব চেয়ে বেশি৷ ওই জেলার মোট ৩২১৮ টি গ্রাম পঞ্চায়েত আসন এবং ৬১১টি পঞ্চায়েত সমিতির আসনের মধ্যে যথাক্রমে ৯৫৮ এবং ১৬৮টি আসনে তৃণমূল প্রার্থীদের বিরুদ্ধে কেউ দাঁড়াননি৷ এমনকী হুগলিতে চারটি জেলা পরিষদ আসনও তৃণমূল বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে গিয়েছে৷ বাঁকুড়া, বর্ধমান, পশ্চিম মেদিনীপুর এবং পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় যথাক্রমে ৩৩২, ৩৯৭, ৬২৮ এবং ২২৮টি গ্রাম পঞ্চায়েত আসন কোনও নির্বাচন ছাড়াই তৃণমূলের দখলে গিয়েছে৷ বিরোধীদের অভিযোগ, মারধর করে তাদের প্রার্থীদের ভোটে মনোনয়ন দাখিল করতে দেয়নি তৃণমূল৷
বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু বলেন, প্রথম দফার ভোটে প্রায় পাঁচ হাজার আসনে শাসকদলের বাধায় বিরোধীরা প্রার্থী দিতে পারেনি৷ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য বলেন, 'এই সরকার বর্বর সরকার৷ খানাকুলে আমাদের একজন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন৷ মেরে তাঁর মুখ বিকৃত করে দিয়েছে৷ বর্ধমান টাউন, কেতুগ্রাম সর্বত্র মনোনয়নে প্রবল বাধা দিয়েছে তৃণমূল৷ বাঁকুড়ার সারেঙ্গায় পঞ্চায়েত সমিতিতে আমাদের প্রার্থী চায়না মাহাতোকে মারধর করে তার প্রার্থিপদ জোর করে প্রত্যাহার করিয়েছে৷' তবে বিরোধীদের এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের মহাসচিব পার্থ চোপাধ্যায়৷ তাঁর বক্তব্য, 'প্রার্থী দিতে পারেনি বলে ওরা এ-সব অভিযোগ করছে৷ এ-সব ছেঁদো কথা৷ ওদের গ্রাম পঞ্চায়েতে কোনও কর্মী নেই, তাই দিতে পারেনি৷ ওরা যাই বলুক না কেন, মানুষ ওদের পাশে নেই৷'
বাম আমলেও শাসক বামফ্রন্টের বিরুদ্ধে একই অভিযোগ করত তৃণমূল সহ তদানীন্তন বিরোধীরা৷ এ ব্যাপারে বিমানবাবুর মন্তব্য, 'আগে যদি কোনও অন্যায় কাজ হয়ে থাকে, তার মানে কি সেই কাজ আবার করতে হবে৷ তবে অতীতে এর মাত্রা কম ছিল৷'
রাজ্যে পালাবদলের পরেও শাসক দলের চরিত্রে যে বদল হয়নি, তার প্রমাণ পদে পদে মিলছে৷ আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রথম দফায় ৯টি জেলায় ২৯০৮টি আসন শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে গিয়েছে, যেমন হত অতীতের বাম জমানায়৷ তখন শাসক বামফ্রন্টের বিরুদ্ধে হামলা বা বাধাদানের যে অভিযোগ তৃণমূল কংগ্রেস করত, এখন সেই একই অভিযোগ শাসকদল তৃণমূলের বিরুদ্ধে করছে বামেরা৷
এই পরিস্থিতিতে পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে রাজ্য সরকার কমিশনের সঙ্গে অসহযোগিতা করছে বলে শনিবার বিকেলে রাজভবনে গিয়ে রাজ্যপাল এমকে নারায়ণনকে ফের জানিয়ে এলেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার মীরা পাণ্ডে৷ পরে মীরাদেবী জানান, 'পঞ্চায়েত নির্বাচনের সর্বশেষ পরিস্থিতি রাজ্যপালকে জানিয়েছি৷ নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ও তাঁকে অবহিত করেছি৷' রাজভবন সূত্রের খবর, রাজ্যপালকে মীরাদেবী জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় বাহিনী না-পাওয়ার ব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রী সাংবাদিক সম্মেলন করে যা বলেছেন, তা সরকারের তরফে চিঠি দিয়ে কমিশনকে জানানো হয়নি৷ এই অবস্থায় সরকার ভোটের নিরাপত্তা নিয়ে কমিশনকে কোনও সন্তোষজনক আশ্বাস না-দিলে আগামী সন্তাহে কমিশন ফের আদালতের দ্বারস্থ হতে পারে৷ মহাকরণ সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠানোর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করার জন্য সোমবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে চিঠি পাঠাবে রাজ্য সরকার৷ এ ব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীলকুমার সিন্ধের সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানা গিয়েছে৷
প্রথম দফার ৯টি জেলার ভোটে এখনও পর্যন্ত রাজ্য নির্বাচন কমিশনের যা হিসাব, তাতে গ্রাম পঞ্চায়েতের মোট ২৯,৮৪৯টি আসনের মধ্যে ২৯০৮টি আসনই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে গিয়েছে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস৷ অর্থাত্, মোট আসনের ১০ শতাংশই কোনও নির্বাচন ছাড়াই তৃণমূলের দখলে গিয়েছে৷ পঞ্চায়েত সমিতির মোট ৫২৬২টি আসনের মধ্যে ৪৪৩টিতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছে তৃণমূল৷ তবে হাওড়া জেলায় ১৩৯টি গ্রাম পঞ্চায়েত আসন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছে বামফ্রন্টও৷ এই ভিন্ন স্রোতও প্রবল ভাবে আলোচনায় উঠে এসেছে৷
২০০৩-এ পঞ্চায়েত ভোটে বিরোধীদের অভিযোগ ছিল, প্রায় ছয় হাজার আসনে তারা প্রার্থী দিতে পারেনি৷ আর ২০০৮-এর ভোটে সারা রাজ্যে ২৩৬২টি গ্রাম পঞ্চায়েত এবং ৪৪৩টি পঞ্চায়েত সমিতির আসনে কোনও নির্বাচন ছাড়াই প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছিলেন৷ বলাই বাহুল্য, তার বেশিরভাগই দখল করেছিল তত্কালীন শাসকদল সিপিএম৷ সেই তুলনায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ের হিসাবে এ বারের পঞ্চায়েত ভোট হয়তো নজির সৃষ্টি করতে চলেছে৷ বিরোধীদের অভিযোগ, শাসক দলের হামলা ও বাধাদানের কারণেই ওই সব আসনে তারা প্রার্থী দিতে পারেনি৷ ২০০৩ ও ২০০৮-এর পঞ্চায়েত ভোটে তদানীন্তন বামফ্রন্ট সরকারের বিরুদ্ধে একই অভিযোগ করেছিল এখনকার শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস৷
শুক্রবারই শেষ হয়েছে প্রথম দফার ভোটের জন্য মনোনয়নপত্র পরীক্ষা করার কাজ৷ তার পরে জেলাগুলি থেকে কমিশনে যে হিসাব পেঁৗছেছে, তাতে দেখা যাচ্ছে হুগলিতে সব থেকে বেশি আসনে তৃণমূল প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন৷ হুগলি নিয়েই বিরোধীদের অভিযোগ ছিল সব চেয়ে বেশি৷ ওই জেলার মোট ৩২১৮ টি গ্রাম পঞ্চায়েত আসন এবং ৬১১টি পঞ্চায়েত সমিতির আসনের মধ্যে যথাক্রমে ৯৫৮ এবং ১৬৮টি আসনে তৃণমূল প্রার্থীদের বিরুদ্ধে কেউ দাঁড়াননি৷ এমনকী হুগলিতে চারটি জেলা পরিষদ আসনও তৃণমূল বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে গিয়েছে৷ বাঁকুড়া, বর্ধমান, পশ্চিম মেদিনীপুর এবং পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় যথাক্রমে ৩৩২, ৩৯৭, ৬২৮ এবং ২২৮টি গ্রাম পঞ্চায়েত আসন কোনও নির্বাচন ছাড়াই তৃণমূলের দখলে গিয়েছে৷ বিরোধীদের অভিযোগ, মারধর করে তাদের প্রার্থীদের ভোটে মনোনয়ন দাখিল করতে দেয়নি তৃণমূল৷
বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু বলেন, প্রথম দফার ভোটে প্রায় পাঁচ হাজার আসনে শাসকদলের বাধায় বিরোধীরা প্রার্থী দিতে পারেনি৷ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য বলেন, 'এই সরকার বর্বর সরকার৷ খানাকুলে আমাদের একজন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন৷ মেরে তাঁর মুখ বিকৃত করে দিয়েছে৷ বর্ধমান টাউন, কেতুগ্রাম সর্বত্র মনোনয়নে প্রবল বাধা দিয়েছে তৃণমূল৷ বাঁকুড়ার সারেঙ্গায় পঞ্চায়েত সমিতিতে আমাদের প্রার্থী চায়না মাহাতোকে মারধর করে তার প্রার্থিপদ জোর করে প্রত্যাহার করিয়েছে৷' তবে বিরোধীদের এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের মহাসচিব পার্থ চোপাধ্যায়৷ তাঁর বক্তব্য, 'প্রার্থী দিতে পারেনি বলে ওরা এ-সব অভিযোগ করছে৷ এ-সব ছেঁদো কথা৷ ওদের গ্রাম পঞ্চায়েতে কোনও কর্মী নেই, তাই দিতে পারেনি৷ ওরা যাই বলুক না কেন, মানুষ ওদের পাশে নেই৷'
বাম আমলেও শাসক বামফ্রন্টের বিরুদ্ধে একই অভিযোগ করত তৃণমূল সহ তদানীন্তন বিরোধীরা৷ এ ব্যাপারে বিমানবাবুর মন্তব্য, 'আগে যদি কোনও অন্যায় কাজ হয়ে থাকে, তার মানে কি সেই কাজ আবার করতে হবে৷ তবে অতীতে এর মাত্রা কম ছিল৷'
No comments:
Post a Comment